#ডিম ও সবজির দাম বৃদ্ধি
#বাজার মনিটরিং সহ দ্রব্যমূল্যর দাম কমানোর আহবান
শেখ জিহাদঃ
দৌলতপুরে ডিম, মুরগি, মাংস সহ সবজির দাম চড়া যার কারণে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ৭০- ৮০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সবজির দাম ১০০- ২৫০ টাকায় ও বিক্রি হচ্ছে। ডিম, মুরগি, মাংস সহ সবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পর্যন্ত। অন্তবর্তীকালীন সরকারের দুই মাস অতিবাহিত হলে ও ভোগ্য পণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরাতে পারছে না বরং, ক্রেতারা বাজারে গেলে – নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্ব গতিতে আরো অস্বস্তিতে পড়ছেন। বিগত সরকারের আমলে নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটদের পকেটে থাকার অভিযোগ। ছিলো যার ফলশ্রুতিতে নিত্য পণ্যের বাজার ছিলো ঊর্ধ্বগতি যার কারণে দেশের সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে দিনযাপন, করেছেন। সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষোভ ঝেড়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। সাধারণ মানুষ এই পরিস্থিতি হতে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিলেন।
সাধারন মানুষের ধারণা ছিলো নতুন সরকার আসলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে এবং নিত্য পণ্যের বাজারে দাম কমবে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও নিত্য পণ্যের দাম * কমাতে পারেনি বরং জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষ’ বলছে – বর্তমান অন্তবর্তীকালিন সরকার মানুষের প্রত্যাশা পুরণ করতে পারছে। না। নিত্য ও পণ্যের বাজার গুলোতে কোনক্রমেই দামের লাগাম টানা যাচ্ছে না। ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম বিক্রেতাদের – নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু তার কোন প্রতিফলন নেই বাজার গুলোতে। न । গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দৌলতপুর বাজার ঘুরে দেখা যায় শাক- T – সবজিতে ভরপুর সবজির বাজার। দোকানিরা বেগুন, শসা, পটল, বরবটি, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, কাঁকরোল, পেঁপে, কড়লা, শিম, গাজর, কচুর মুখি, ঝিঙ্গে, চিচিংঙ্গা, লাউ, বাঁধাকপির সহ অন্যান্য সবজির পসরা জির পসরা সাজিয়ে বসেছেন, বাজারে ক্রেতার সমাগম থাকলে ও নেই তেমন বেচাবিক্রি কারণ অসহনিয় দামে বিক্রি হচ্ছে – সবজি। বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন ১২০-১৪০ টাকা, করলা ১০০ ১২০, ঢেঁড়শ ৭০-৮০, বরবটি ১৪০-১৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৮০, ধুন্দুল ৭০-৮০ টাকা ও পটল ৭৫-৮০, মিষ্টি কুমড়া ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাঁচা পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, কাঁকরোল ৮০, গাজর ১৯০-২০০, কচুরমুখী ৬০ ৭০ টাকা, টমেটো বেড়ে ২৪০-২৫০ টাকা, শিম ২২০-২৬০ টাকা ও শসা ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি-প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৭০-৮০, বাঁধাকপি ৭০-৭৫ টাকা, ওলকচু ৯০-১১০, আলু কেজি প্রতি ৫৫ ও প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৭০ ৮০ টাকা। কাঁচা মররিচের কেজি – এখন ২৪০-২৮০ টাকায়। পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের শর্ত শিথিল ও শুল্ক কমানোর পর দেশে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। আগে যে পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, তা এখন ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিহালি মাঝারী সাইজের লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা এবং ডজন ১৬৫- – ১৬৮ টাকা, বড় সাইজের লাল ডিম প্রতি হালি ৫৮-৬০ টাকা আর মাঝারী সাইজের সাদা ডিম প্রতি হালি ৫৪ টাকা প্রতি ডজন ১৬২ টাকা। বড় সাইজের সাদা ডিম ১৬৮-১৭৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে যা কিছু দিন আগে প্রতিহালি ৪৮- ৫২ টাকা এবং প্রতি জজন ১৪৪-১৫৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে প্রতি হালি ডিমে ৮/১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি মাংস ও মুরগির দাম ও বৃদ্ধি পেয়েছে বয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা, কক ও সোনালী ২৫০-২৬০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০-৭০০ টাকা এবং খাশির মাংস ১১ শত টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন আগে বাজারে বয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, কক ও সোনালী বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা, গরুর মাংস ৬০০ টাকা এবং খাশির মাংস ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সবজি কিনতে আসা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরীরত জালাল উদ্দিন বলেন দাম নাগালের বাইরে অধিকাংশ সবজি ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজার করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে সবজি, মাংস, ডিম সহ সব কিছুর দাম হুহু করে বাড়ছে। এই ভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষ অনাহারে ও অপুষ্টিতে মারা যাবে। আমারা নিম্ন আয়ের মানুষ যে বেতন পাই তা দিয়ে মাসের ১৫ দিন কোন রকম চলে, বাকি ১৫ দিন ধার দেনা করে চলতে হয়। তারপরও যদি নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের দায়দেনার পরিমান শুধু বাড়তে থাকবে।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, সম্প্রতি বন্যায় ও টানা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত। অধিকাংশ ক্ষেতে পানি জমে রয়েছে যার কারনে কৃষক ফসল ফলাতে পারছে না। যদি ও কিছু কিছু ক্ষেতে ফসল হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কৃষক ক্ষেতে যথাযথ ভাবে ফলস ফলাতে না পারার কারণে বাজারে সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে। দৌলতপুর বাজারে ডিম কিনতে আসা গৃহবধূ তানিয়া বেগম জানান আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ আমাদের দাম দিয়ে প্রতিদিন মাছ, মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব না। তাই অপুষ্টি থেকে বাঁচার জন্য পরিবারে সদস্যদের ডিম খাইয়ে থাকি। হঠাৎ করে ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রয়োজনের তুলনায় কম ডিম কিনতে হচ্ছে। ডিমের দাম এভাবে বাড়তে ড়তে থাকলে আগামি প্রজন্মের মানুষ অপুষ্টিতে ভুগবে তাই সরকারের কাছে প্রত্যাশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করে ডিম সহ সকল দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্য রাখার ব্যবস্থা করা। দৌলতপুরের ডিম ব্যবসায়ী তাজ বলেন দেশে দৈনিক সারে ৪ কোটির মত ডিমের চাহিদা রয়েছে।